এম আর আখতার মুকুল (৯ আগস্ট ১৯৩০ - ২৬ জুন ২০০৪) একজন বাংলাদেশি মুক্তিযোদ্ধা যিনি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রচারিত স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের চরমপত্রের পরিচালক, লেখক ও কথক ছিলেন।[২] 'চরমপত্র' অনুষ্ঠানটির মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যাপক সাহস, উৎসাহ-উদ্দীপনা ও অনুপ্রেরণা যুগিয়েছিল৷
সাংবাদিকতা ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জন্য ২০০১ সালে তিনি বাংলাদেশ সরকার থেকে স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার লাভ করেন। তিনি একজন কলামিষ্ট৷ তার প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা ৩৫টি
জাহানারা ইমাম (৩ মে ১৯২৯ - ২৬ জুন ১৯৯৪) ছিলেন একজন বাংলাদেশী লেখিকা, কথাসাহিত্যিক, শিক্ষাবিদ এবং একাত্তরের ঘাতক দালাল বিরোধী আন্দোলনের নেত্রী। তিনি বাংলাদেশে শহীদ জননী হিসেবে পরিচিত। তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ একাত্তরের দিনগুলি। একাত্তরে তাঁর জ্যেষ্ঠ পুত্র শাফী ইমাম রুমী দেশের মুক্তিসংগ্রামে অংশগ্রহণ করেন এবং কয়েকটি সফল গেরিলা অপারেশনের পর পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হাতে গ্রেফতার হন এবং পরবর্তীতে নির্যাতনের ফলে মৃত্যুবরণ করেন। বিজয় লাভের পর রুমীর বন্ধুরা রুমীর মা জাহানারা ইমামকে সকল মুক্তিযোদ্ধার মা হিসেবে বরণ করে নেন৷ রুমীর শহীদ হওয়ার সূত্রেই তিনি শহীদ জননীর মযার্দায় ভূষিত হন৷
রাবেয়া খাতুন ঢাকার বিক্রমপুরে তার মামার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তবে, তার পৈতৃক বাড়ি মুন্সিগঞ্জ জেলার শ্রীনগর উপজেলায় অবস্থিত ষোলঘর গ্রামে৷ তার বাবা মৌলভী মোহাম্মদ মুল্লুক চাঁদ এবং মা হামিদা খাতুন। আরমানিটোলা বিদ্যালয় থেকে প্রবেশিকা (বর্তমানে মাধ্যমিক) পাস করেন ১৯৪৮ সালে। রক্ষণশীল মুসলিম পরিবারের মেয়ে হওয়ায় বিদ্যালয়ের গন্ডির পর তার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাগ্রহণ বন্ধ হয়ে যায়।
২১টি উপন্যাস, ৭টি গল্পগ্রন্থ ও ৪টি প্রবন্ধগ্রন্থের রচয়িতা সেলিনা হোসেন বাংলাদেশের একজন জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক। সমকালীন রাজনৈতিক সংকট ও দ্বন্দ্বের উৎস ও প্রেক্ষাপট উঠে এসেছে সেলিনা হোসেন এর বই সমূহ-তে। সেলিনা হোসেন এর বই সমগ্র অনূদিত হয়েছে ইংরেজি, রুশসহ একাধিক ভাষায়। প্রবীণ এ লেখিকা ২০১৪ সাল থেকে বাংলাদেশ শিশু একাডেমির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করার পর কর্মজীবন থেকে অবসর নেন। সেলিনা হোসেন ১৯৪৭ সালের ১৪ই জুন রাজশাহীতে জন্মগ্রহণ করেন। আদি পৈতৃক নিবাস নোয়াখালীতে হলেও সেখানে বেশি দিন থাকা হয়নি তার। চাকরিসূত্রে তার বাবা রাজশাহী চলে এলে সেটিই হয়ে ওঠে সেলিনার শহর। স্থানীয় এক বালিকা বিদ্যালয়ে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা সমাপ্ত করে রাজশাহী মহিলা কলেজে ভর্তি হন। ছোটবেলা থেকেই সাহিত্য পড়তে ভালোবাসতেন তিনি। আর ভালোবাসার টানে উচ্চ মাধ্যমিক শেষে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে ভর্তি হন। এখান থেকেই স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। ১৯৭০ সালে বাংলা একাডেমির গবেষণা সহকারী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন সেলিনা হোসেন। এরপর সরকারি কলেজে শিক্ষকতা এবং পাবলিক সার্ভিস কমিশনেও কাজ করেছেন তিনি। পাশাপাশি পত্রপত্রিকার জন্য চালিয়ে গেছেন তার কলম। টানা ২০ বছর তিনি ‘ধান শালিকের দেশ’ পত্রিকার সম্পাদনা করেন। ১৯৯৭ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত বাংলা একাডেমির প্রথম নারী পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। সেলিনা হোসেন মুক্তিযুদ্ধের উপন্যাস রচনা করে পাঠকমনে চিরস্থায়ী আসন করে নিয়েছেন। তার রচিত মুক্তযুদ্ধ বিষয়ক কালজয়ী উপন্যাস ‘হাঙর নদী গ্রেনেড’ নিয়ে তৈরি হয়েছে চলচ্চিত্রও। ‘যাপিত জীবন’, ‘ক্ষরণ’, ‘কাঁটাতারে প্রজাপতি’, ‘ভালোবাসা প্রীতিলতা’, ‘যুদ্ধ’, ‘গায়ত্রী সন্ধ্যা’ (তিন খণ্ড) ইত্যাদি তার জনপ্রিয় উপন্যাস। ‘স্বদেশে পরবাসী’, ‘একাত্তরের ঢাকা’, ‘ঊনসত্তরের গণ-আন্দোলন’ ইত্যাদি তার জনপ্রিয় প্রবন্ধ। কিশোরদের জন্য তিনি লিখেছেন ‘কাকতাড়ুয়া’, ‘চাঁদের বুড়ি পান্তা ইলিশ’, ‘আকাশ পরী’, ‘এক রূপোলি নদী’ সহ বেশ কিছু সুপাঠ্য গ্রন্থ। সাহিত্যাঙ্গনে এই অনবদ্য অবদানের জন্য রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় তাকে ডি.লিট ডিগ্রি প্রদান করে। এছাড়াও তিনি ‘আলাওল সাহিত্য পুরস্কার’, ‘রবীন্দ্রস্মৃতি পুরস্কার’, ‘বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার’ সহ অসংখ্য পদক পুরস্কার পেয়েছেন।
ভবেশ রায়ের জন্ম ১৯৪৭ সালের ৮ জুলাই ঢাকা জেলার ধামরাই থানার বাইশাকান্দা গ্রামে। শিক্ষাজীবন শুরু গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে, তার পর কুত্তরা আব্বাস আলি হাইস্কুলে। ইন্টারমিডিয়েট করটিয়া সাদৎ কলেজে। স্নাতক ঢাকার জগন্নাথ কলেজে এবং স্নাতকোত্তর (বাংলা সাহিত্য) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। সাংবাদিকতা দিয়ে কর্মজীবনের শুরু। অধুনালুপ্ত দৈনিক সমাজ পত্রিকার ফিচার এডিটর ছিলেন। তারপর সমবায় কর্মকর্তা (জনসংযোগ কর্মকর্তা) হিসেবে ১৯৯৬ সালে চাকরি থেকে স্বেচ্ছা অবসর গ্রহণ। স্কুল জীবন থেকেই লেখালেখির শুরু। বর্তমানে সাৰ্বক্ষণিক লেখালেখি করেন। প্ৰকাশিত বইয়ের সংখ্যা অর্ধশতাধিক। কিশোর বিজ্ঞানের অন্যতম জনপ্রিয় লেখক ।
রায়হান আহমেদ বাংলাদশের একজন বহুমাত্রিক লেখক। সন্দেহ নেই প্রকাশনার জগতে তাঁর আগমন বিলম্বিত। তবে তিনি যে শেষ পর্যন্ত এসেছেন, তা বাঙলাভাষী তথা উদার, অসাম্প্রদায়িক, এবং জনতার মুক্তির শ্লোগানে মুখর যে কোন সংগ্রামী মানুষের এক অশেষ প্রাপ্তি। তিনি জন্মগ্রহণ করেন মহাকবি কায়কোবাদের এলাকায় তথা ঢাকার নবাবগঞ্জে ৩০ শে নভেম্বর, ১৯৫৬ সনে।
ব্যক্তিজীবনে তাঁর স্ত্রী শিরিন আহমেদ, সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২৯ বছর শিক্ষকতা করে স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণ করেন, এক পুত্র রকি আহমেদ (বুদ্ধি ও মানসিক প্রতিবন্ধী) এবং এক কন্যা স্বর্ণা আহমেদ।
ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ ১৯৫৪ সালের ১ মে মানিকগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা মরহুম আনিছউদ্দিন আহমেদ এবং মাতা সাহেরা খাতুন। তিনি ফিন্ডার্স ইউনিভার্সিটি অব সাউথ অস্ট্রেলিয়া থেকে ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন। বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড এবং কম্পিউটার প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতার আন্দোলনে তিনি অত্যন্ত উৎসাহী একজন কমী । তিনি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের সঙ্গে পরপর ছয়বার অ্যাসোসিয়েশন ফর কম্পিউটিং মেশিনারি আয়োজিত প্রোগ্রামিংয়ের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে অংশগ্রহণ করছেন। ২০০২ সালে তিনি সেখানে সর্বশ্রেষ্ঠ কোচ হিসেবে পুরস্কৃত হন। ড. কায়কোবাদ বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক। তার স্ত্রী সালেহা সুলতানা এবং তিনি দুই ছেলের জনক।