Notice Update

 কর্ণেল শাফায়াত জামিল (অব.) (জন্ম: ১ মার্চ, ১৯৪০ - মৃত্যু: ১১ আগস্ট, ২০১২) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতা যুদ্ধে তার সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর বিক্রম খেতাব প্রদান করে। তাঁর বাবার নাম এ এইচ এম করিমউল্লাহ এবং মায়ের নাম লায়লা জোহরা বেগম। তাঁর পিতা এএইচ করিমুল্লাহ ছিল ইস্ট পাকিস্তান সিভিল সার্ভিস (জুডিশিয়াল) অফিসার ছিলেন। তার স্ত্রীর নাম রাশিদা শাফায়াত। তাঁদের তিন ছেলে। শাফায়াত জামিল ঢাকা কলেজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমী থেকে শিক্ষা গ্রহন করেন। তিনি ঐ একাডেমীতে জেনারেল পারভেজ মুশাররফের (পরবর্তীতে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট) সহপাঠি ছিলেন। শাফায়াত জামিল ১৯৬৪ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট হিসেবে কমিশনপ্রাপ্ত হন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি চতুর্থ বেঙ্গল রেজিমেন্টে কর্মরত ছিলেন। এই রেজিমেন্টের অবস্থান ছিল কুমিল্লা সেনানিবাসে। সম্ভাব্য ভারতীয় আগ্রাসনের কথা বলে পাকিস্তানি সেনারা এই রেজিমেন্টের দুটি কোম্পানিকে ১৯৭১ সালের ১ মার্চ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পাঠায়। একটি কোম্পানির নেতৃত্বে ছিলেন তিনি। ২৬ মার্চ পাকিস্তানি সেনাদের আক্রমণের সংবাদ পেয়ে তিনি তাঁর ও অপর কোম্পানির সবাইকে নিয়ে বিদ্রোহ করে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। প্রতিরোধপর্বে আশুগঞ্জ-ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও আখাউড়া-গঙ্গাসাগর এলাকায় যুদ্ধ করেন। এরপর ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের মতিনগরে যান। তাঁকে তৃতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তিনি দেওয়ানগঞ্জ, সিলেটের ছাতকসহ আরও কয়েক স্থানে যুদ্ধ করেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পরে, জামিল লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদে উন্নীত হন এবং বীর বিক্রম পদক লাভ করেন। ১৯৭৪ সালে তিনি কর্নেল পদে উন্নীত হন এবং ৪৬ পদাতিক ব্রিগেডের কমান্ডার নিযুক্ত হন । ৩ নভেম্বর, ১৯৭৫ তারিখে তিনি এবং খালেদ মোশাররফ খন্দকার মোস্তাক আহমদের বিরুদ্ধে একটি অভ্যুত্থান ঘটান । ৬ নভেম্বর মোস্তাক রাষ্ট্রপতির পদ থেকে সরে দাঁড়ান এবং বিচারপতি আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম তার স্থলাভিসিক্ত হন। ৭ নভেম্বর এক পাল্টা অভ্যুত্থানে খালেদ মোশাররফকে হত্যা করা হয় এবং কর্নেল জামিল গ্রেফতার হন । জামিল ১৯৮০ সালের ২৬ মার্চ সেনাবাহিনী থেকে অবসরপ্রাপ্ত হন ।

আনােয়ারা সৈয়দ হক মাত্র বারাে বছর বয়সে হাতে তুলে নিয়েছিলেন কলম। সেই থেকে কোনােদিন তার লেখা বন্ধ হয় নি। মুক্তিযুদ্ধের। সময় যখন তার মুখ ছিল বন্ধ এবং তিনি। পাকিস্তানি মেডিক্যাল কোরে মেডিক্যাল অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন, তখনাে তিনি লিখে। গেছেন বন্দী জীবনের দৈনন্দিন সংগ্রামের কথা। সেই সংগ্রাম, সেই নীরব অশ্রুপাত, স্বামী কবিসব্যসাচী সৈয়দ শামসুল হক-কে নিরাপদে দেশের বাইরে পাঠাবার এবং সফল হওয়ার যে ইতিহাস মূলত পরবর্তী জীবনে তাঁকে জীবন সম্পর্কে, মানুষের বেঁচে থাকা সম্পর্কে, বন্দী মানুষের। মুক্তিসংগ্রাম সম্পর্কে শিখিয়েছে অনেক। নিরন্তর সাহিত্য রচনার ফলশ্রুতি হিসেবে তিনি পেয়েছেন অসংখ্য সম্মাননা এবং পদক। তার। ভেতরে অগ্রণী ব্যাংক সাহিত্য পুরস্কার, চাদের হাট পুরস্কার, শিশু একাডেমি পুরস্কার, বাংলা একাডেমি কবির চৌধুরী শিশু সাহিত্য পুরস্কার, ইউরাে পুরস্কার, অনন্যা শীর্ষ দশ পুরস্কার, পদক্ষেপ সম্মাননা, মাইকেল মধুসূদন পুরস্কার, অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার ইত্যাদি। বিশেষ করে ২০০৯ সালে পেয়েছেন বাংলা একাডেমি পুরস্কার এবং দু’হাজার উনিশ সালে পেয়েছেন একুশে পদক।

লুৎফর রহমান রিটন পুরনো ঢাকার ওয়ারী এলাকায় তার শৈশব অতিবাহিত হয়। ১৯৭৯ খ্রিস্টাব্দে নবাবপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও ১৯৮১ খ্রিস্টাব্দে এইচএসসি পরীক্ষা দেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ১৯৮৯ খ্রিস্টাব্দে আবুজর গিফারি কলেজ থেকে স্নাতক শেষ করেন। তিনি ২০০১ খ্রিস্টাব্দে জাপানে বাংলাদেশের কালচারাল এটাশে নিযুক্ত হয়েছিলেন। সাবেক সম্পাদক হিসেবে ছোটদের কাগজ (অধুনালুপ্ত); জাপানস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের সাবেক ফার্স্ট সেক্রেটারি (২০০০-২০০১) ছিলেন। তার প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা শতাধিক। উল্লেখযোগ্য প্রকাশিত গ্রন্থ: ছড়া: ধুত্তুরি (১৯৮২); ঢাকা আমার ঢাকা (১৯৮৪); উপস্থিত সুধীবৃন্ধ (১৯৮৪); হিজিবিজি (১৯৮৭); তোমার জন্য (১৯৮৯); ছড়া ও ছবিতে মুক্তিযুদ্ধ (১৯৮৯); রাজাকারের ছড়া (১৯৯৯); শেয়ালের পাঠশালা (১৯৯২); রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই স্মারকগ্রন্থ (২০০০); নেপথ্য কাহিনী (২০০১)। সম্মাননা ও স্বীকৃতি সিকান্দার আবু জাফর সাহিত্য পুরস্কার ১৯৮২, অগ্রণী ব্যাংক শিশু ,সাহিত্য পুরস্কার ১৯৮২, ১৯৯৬, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পুরস্কার ১৯৮৪, বাংলা একাডেমী সাহিত্য পুরস্কার ২০০৭

শারমিন জিকরিয়া ঢাকা জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। পৈত্রিক নিবাস মুর্শিদাবাদ জেলায়। স্কুল জীবনে সাহিত্যচর্চায় হাতেখড়ি। পড়াশুনা শেষ করে তিনি কর্মময় জীবনে প্রবেশ করেন। বর্তমানে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে কর্মরত। সাহিত্যের প্রায় সব শাখাতে তিনি বিচরণ করেছেন। কবিতা, ছড়া, ছােটগল্প, নাটক লিখে প্রশংসা, কুড়িয়েছেন ইংল্যান্ড, ফ্রান্স দিল্লী কলিকাতাসহ বাংলাদেশের প্রায় সব জেলায় তিনি ভ্রমণ করেছেন। দারিদ্র নিপীড়িত মানুষের দুঃখ-দূর্দশা তাকে পীড়া দেয়। মা তার সকল প্রেরণার উৎস। শখ : ভ্রমণ, বইপড়া, গান শােনা।

মুসা সাদিক মুক্তিযুদ্ধকালে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের ওয়ার করেসপনডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে ‘রণাঙ্গন ঘুরে এলাম’ এবং ‘মুক্তাঞ্চল ঘুরে এলাম’ শিরোনামে প্রচারিত দুটি কথিকা তিনি স্বকণ্ঠে প্রচার করতেন। কথিকা দুটি সপ্তাহে কয়েকবার প্রচার হতো। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অবস্থান ও গতিবিধির ওপর তাঁর সরবরাহকৃত গোয়েন্দা তথ্য মুক্তিবাহিনী এবং ভারতীয় মিত্রবাহিনীর রণ-কৌশল নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। মুক্তিযুদ্ধে তাঁর দুঃসাহসিক অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ লিখেছেন ‘... মুক্তিযুদ্ধে সামরিক ও বেসামরিক ক্ষেত্রে জনাব মুসার অপরিসীম অবদান এবং বীর যোদ্ধা ক্যাপ্টেন হুদা যেভাবে পাকসেনাদের গোলাবৃষ্টির মধ্যে নিজের জীবনের নিরাপত্তা উপেক্ষা করে মুসার জীবন বাঁচিয়েছেন, সে জন্য তাঁদের উভয় জনের নাম ইতিহাসে লিপিবদ্ধ করার জন্য এবং তাঁদের কাছে জাতির ঋণ স্বীকার করার জন্য মুক্তিযুদ্ধের সরকারের পক্ষে আমি এখানে স্বাক্ষর করলাম।’ স্বাক্ষর : তাজউদ্দীন আহমদ, তারিখ : ২১.০৩.১৯৭২। তাজউদ্দীন আহমদ-প্রদত্ত এই স্বীকৃতির পর বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে তিনি ‘জীবন্ত শহিদ’ হিসেবে খ্যাত হয়ে ওঠেন। যৌবনের শুরুতে সাংবাদিকতাকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করা মুক্তিযোদ্ধা লেখক মুসা সাদিক বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সচিবালয়ে ভিন্ন-ভিন্ন রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ১২ বছর দায়িত্ব পালন করেছেন। অবসরের পূর্বে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সচিব পদে নিয়োজিত ছিলেন। সাহিত্য ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ছাত্র মুসা সাদিকের প্রকৃত নাম মোহাম্মদ মুসা। তিনি ১৯৫১ সালের ৩০শে অক্টোবর সাতক্ষীরা জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। অবসরোত্তর জীবনে লেখালেখি ছাড়াও সামাজিক-রাজনৈতিক কর্মকান্ডে জড়িত আছেন।

লেখক ও গবেষক। জন্ম ঢাকায়। পৈতৃক ভিটা বাড্ডা থানাধীন বড় বেরাইদে। কিন্তু শৈশব ও কৈশোর কেটেছে ঢাকার কাফরুলে। ব্যবস্থাপনায় স্নাতকোত্তর। ছোটবেলা থেকেই ঝোঁক সংস্কৃতির প্রতি। নানা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত। যুক্ত ছিলেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র ও থিয়েটারের সঙ্গেও। মুক্তিযুদ্ধ, আদিবাসী ও ভ্রমণবিষয়ক লেখায় আগ্রহ বেশি। তাঁর রচিত যুদ্ধদিনের গদ্য ও প্রামাণ্য গ্রন্থটি ২০১৫ সালে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক মৌলিক গবেষণাগ্রন্থ হিসেবে ‘তরুণ কবি ও লেখক কালি ও কলম’ পুরস্কার লাভ করে। নিয়মিত লিখছেন দেশের প্রথম সারির দৈনিক, সাপ্তাহিক, ব্লগ এবং অনলাইন পত্রিকায়। স্বপ্ন দেখেন মুক্তিযুদ্ধ, আদিবাসী এবং দেশের কৃষ্টি নিয়ে ভিন্ন ধরনের তথ্য ও গবেষণামূলক কাজ করার। সহধর্মিণী তানিয়া আক্তার মিমি এবং দুই মেয়ে পৃথা প্রণোদনা ও আদিবা।